ফরিদপুরে সাব-রেজিস্ট্রারসহ ৯ জনের নামে দুদকের মামলা

নাজমুল হাসান নিরব,ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জালিয়াতি করে জমির দলিল তৈরির অভিযোগে তনু রায় (৩৮) নামে একজন সাব-রেজিস্ট্রারসহ নয়জনের নামে আদালতে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)

ওই সাব রেজিস্ট্রার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন বলে উল্লেখ করা হয় মামলায়।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুর্নীতি দমন কমিশনের ফরিদপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বর্তমানে ঐ সাব-রেজিস্ট্রার রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন।

এর আগে গত সোমবার (২১ অক্টোবর) ফরিদপুরের সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি করেন দুদকের ফরিদপুর কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসান।

মামলায় আলফাডাঙ্গা উপজেলার টিকরপাড় গ্রামের মৃত আবুল হাসানের স্ত্রী শুকরন নেছা ও তার তিন মেয়ে নুরজাহান বেগম (৫২), হাসি বেগম ও রাশিদা বেগম, রাশিদা বেগমের স্বামী নুর ইসলাম (৪৮), নওড়া গ্রামের মো. বাচ্চু মিয়া (৪৫), দলিল শনাক্তকারী কামারগ্রামের আলী হায়দার (৫৫) ও দলিল লেখক আলী হায়দারকে (৫৫) আসামি করা হয়।

এছাড়া মোক্তার হোসেন নামে অপর এক দাতাকে অভিযুক্ত করা হলেও তিনি মৃত্যুবরণ করায় মামলায় আসামি থেকে বাদ দেওয়া হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে পান্নু বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি ও তার চার ভাইয়ের নামে থাকা বিলজোয়ারিয়া টিকরপাড় মৌজার সাবেক ২২২ হাল ৩৭৭ নং খতিয়ানের ৬১ দাগে ৩৯ শতাংশ জমি, ১৫২ নং দাগে ৩৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৩২ দশমিক ৫৮০ শতাংশ জমি এবং ১৫৩ নং দাগে তিন শতাংশ জমির মধ্যে দুই দশমিক ৭১৫ শতাংশ পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত জমি দেখিয়ে জাল জালিয়াতি করে বিআরএস পর্চা তৈরি করেন।

পরে দলিল গ্রহীতা আপন বোন ও কন্যা রাশিদা বেগমের কাছে হস্তান্তর করে। এতে সাব-রেজিস্ট্রার তনু রায় অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে দাখিলকৃত জাল পর্চার ভিত্তিতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলিল নিবন্ধন করে।

এজাহারে দুদক আরও উল্লেখ করেন, দলিলের দাখিলকৃত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ওই জমির দাতাদের মালিকানা প্রমাণের জন্য আবুল হাসানের কাছ থেকে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে দাতাদের নামে প্রকাশিত বিআরএস পর্চা দাখিল করা হয়। তবে অনুসন্ধানকালে দাখিলকৃত বিআরএস পর্চার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে মামলায় উল্লেখ করে দুদক।

মামলার বিষয়ে নিশ্চিত করে জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাস বলেন, জাল পর্চা তৈরি করে জমি দলিল করায় আদালতে মামলাটি করা হয়েছে।

তবে সাব রেজিস্ট্রার তনু রায় দাবি করেন, তিনি কোনো জালিয়াতি করেননি। তিনি বলেন, ‘তৎকালীন ওই জমির পর্চা জাল ছিল কি-না তা প্রমাণ করা যায়নি, কারণ সেই সময় বিআরএস গেজেট ছিল না। ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *