কুকুর কীভাবে সচিবালয়ে ঢুকল

জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে চক্রান্ত আছে বলে মনে করেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কুকুর কীভাবে সচিবালয়ে ঢুকল?

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের হল রুমে ‘ঠাকুরগাঁও রাইজিং’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

সচিবালয়ের আগুন নিয়ে সারজিস আলম বলেন, আগুন শুধু মাত্র আমাদের দুই সহযোদ্ধা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের রুমে লাগানো হয়েছে। সেখানে কুকুরের মরদেহ প্রমাণ করে এটি ষড়যন্ত্র। সচিবালয়ে আমলারা খুনি হাসিনাকে বসিয়ে রেখেছিল। গণঅভ্যুত্থানের আগে কিছু আমলা নামক দাস ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় স্লোগান দিয়েছে খুনি হাসিনার পক্ষে। তারা এখনো সচিবালয়ে চাকরি করে। তারা চাকরি করলে সচিবালয় কিভাবে নিরাপদ থাকবে। হয় সাদা নইতো কালা৷ তাদের চেয়ারে বসিয়ে রাখলে তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠু ভাবে পাওয়া সম্ভব না৷ সে কারনে এখন অপকর্ম হচ্ছে, দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন হচ্ছে।

সারজিস আলম বলেন, ‘সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনের দুই প্রান্তের দুই রুমে আগুন জ্বলছে। দূরত্ব প্রায় ১০০ মিটার। এটা কীভাবে সম্ভব? এমন দুই জনের রুমে আগুন লেগেছে, যারা এই আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে আর এখন সরকারে প্রতিনিধিত্ব করছে।’

তিনি বলেন, ‘পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, সচিবালয়ে আগুন লাগা রুমে একটি কুকুর পাওয়া গেছে। আমি বুঝতে পারছি না- একটি কুকুর কীভাবে সচিবালয়ের রুমে ঢুকল? এটা যে ষড়যন্ত্র, তা আমি নিশ্চিত। এ ঘটনা আমাদের তদন্ত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যারা এই আন্দোলনে আহত ও নিহত হয়েছে, তাদের রক্তের দায় তো এটা যে, সুন্দর সংস্কারের মাধ্যমেই নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।’

স্ট্যান্ডার্ড সংস্কার শেষ হওয়ার পরে নির্বাচন উল্লেখ্য করে সারজিস আলম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের আগে যদি বলা যেত দুই-তিন বছর সংস্কারের জন্য সময় দিতে হবে তাহলে শুধু রাজনৈত্তিক দল না একজন সাধারণ মানুষকেও দ্বিমত পাওয়া যেতনা৷ গণঅভ্যুত্থানের এখনো ৫ মাস পার হয়নি। তাদেরকে স্ট্যান্ডার্ড সংস্কারের সময় ও সুযোগ দিতে হবে৷ তারা যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে৷ তা না হলে এই সুযোগ খুনি হাসিনা কাজে লাগিয়ে পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে৷ আবার নির্বাচনের সময়কে দীর্ঘ করে দেশের নাজুক পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়া যাবেনা৷

সারজিস আলম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের আগে ঠাকুরগাঁওয়ের শিক্ষার্থীদের মিছিল দেখে আমাদের শরীর শিউরে উঠেছে অথচ সেটাকে পুঁজি করে মামলা বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি হচ্ছে। মামলায় নাম দেওয়ার সময় টাকা আবার মামলা থেকে নাম কাটার সময় টাকা নেওয়া হচ্ছে৷ বড় বড় ব্যবসায়ীদের বাসায় ডেকে নিয়ে এসে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এসবের জন্য এত মানুষ শহীদ হয়নি৷

জাতীয় নাগরিক কমিটি নিয়ে তিনি বলেন, এটি কোন রাজনৈতিক দল নয়। এটি একটি রাজনৈতিক শক্তি। সকলে অনুভব করে নতুন কিছু দরকার৷ বাংলাদেশের লিডারশীপগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। আগামীতে ডিমান্ড অনুযায়ী দক্ষ নেতৃত্ব তৈরীর প্ল্যাটফরম হিসেবে কাজ করবে নাগরিক কমিটি৷ এসব নেতৃত্ব আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *